পৃথিবীর বিভিন্ন গতি, অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশঃ
১) কে প্রথম প্রমাণ করেন যে, পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘোরে ?
উত্তর. কোপারনিকাস
২) পৃথিবীর কটি গতি এবং কী কী ?
উত্তর. দুটি গতি, আহ্নিক গতি ও বার্ষিক গতি
৩) আহ্নিক গতি কাকে বলে?
উত্তর. পৃথিবীর নিজের অক্ষের চারিদিকে ঘূর্ণনকে পৃথিবীর আহ্নিক গতি বলে।
৪) আবর্তন গতির অপর নাম কী?
উত্তর. আহ্নিক গতি
৫) বার্ষিক গতি কাকে বলে?
উত্তর. পৃথিবীর সূর্যের আকর্ষণে সূর্যের চারিদিকে এক বার পরিক্রমণ কে বার্ষিক গতি বলে।
৬) পৃথিবীর পরিক্রমণ গতির অপর নাম কী?
উত্তর. বার্ষিক গতি
৭) আবর্তন বা আহ্নিক গতির ফলে পৃথিবীতে কী কী পরিবর্তন হয়?
উঃ দিন-রাত্রি হয়, সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত হয়, সময় নির্ধারণ করা যায়, নিয়ত বায়ুপ্রবাহের ও সমুদ্রস্রোতের গতিবিক্ষেপ হয়, জোয়ার ভাঁটা হয়, উদ্ভিদ ও প্রাণীজগৎ সৃষ্টি হয়েছে।
৮) বার্ষিক গতির ফলে ভু-পৃষ্ঠে কী কী পরিবর্তন হয়?
উত্তর. বছর বা সময়কাল নির্ধারণ করা যায়, দিন-রাত্রির দৈর্ঘ্যের হ্রাস-বৃদ্ধি হয়, ঋতু পরিবর্তন হয়।
৯) সৌরদিন কাকে বলে?
উত্তর. পৃথিবী তার নিজ অক্ষের চারপাশে একবার ঘূর্ণন সময়সীমাকে গড় সৌরদিন বলে। এর মান ৮৬৪০০ সেকেন্ড বা ২৩ ঘন্টা ৫৬ মিনিট ৪ সেকেন্ড ।
১০) নক্ষত্র দিন কাকে বলে ?
উত্তর. সুর্য ছাড়া অন্য কোনাে নক্ষত্রকে স্থিরবিন্দু বয়ে পৃথিবীর কোনাে নির্দিষ্ট দ্রাঘিমা পর পর দুবার সেই নক্ষত্র যখন সামনে আসে তখন তাকে বলা হয় নক্ষত্র দিন ।
১১) সূর্যের চারিদিকে পৃথিবীর একবার ঘুরে আসতে কত সময় লাগে?
উত্তর. ৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট ৪৬ সেকেণ্ড।
১২) মেরুজ্যোতি বা মেরুপ্রভা কী?
উত্তর. মেরুজ্যোতি বা মেরুপ্রভা বা আরোরা হলো আকাশে একধরনের প্রাকৃতিক আলোর প্রদর্শনী। প্রধানত উঁচু অক্ষাংশের এলাকাগুলোতে আরোরা'র দেখা মিলে।একেই মেরুজ্যোতি বা মেরুপ্রভা বলে।
১৩) পৃথিবীর মেরুদণ্ড বা অক্ষরেখা কাকে বলে?
উত্তর. পৃথিবীর উত্তর মেরু বা সুমেরু এবং দক্ষিণ মেরু বা কুমেরু যে কাল্পনিক রেখার সাহায্যে যুক্ত করা হয়, তাকে মেরুদণ্ড বা অক্ষরেখা বলে।
১৪) অক্ষরেখা কাকে বলে?
উত্তর. নিরক্ষরেখার উভয়দিকে ভূ-পৃষ্ঠকে পূর্ব-পশ্চিমে বেষ্টন করে থাকা সম-অক্ষাংশযুক্ত কাল্পনিক রেখাগুলিকে বলে অক্ষরেখা বা সমাক্ষরেখা।
১৫) প্রতিটি অক্ষরেখার কোণের সমষ্টি কত?
উত্তর. ৩৬০ ডিগ্রী।
১৬) ‘অহ্ন’ কথাটির অর্থ কী?
উত্তর. দিন
১৭) কলকাতার অক্ষাংশ কত?
উত্তর. ২২ ডিগ্রী ৩০ মিনিট উত্তর
১৮) পৃথিবীর কোন গতির জন্য ভূ-পৃষ্ঠে দিন-রাত্রি হয়?
উত্তর. আহ্নিক গতির জন্য
১৯) আবর্তনের সময় পৃথিবী কোন দিক থেকে কোন দিকে ঘোরে?
উত্তর.পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে
২০) পৃথিবীর কক্ষপথ কাকে বলে?
উত্তর. যে নির্দিষ্ট উপবৃত্তাকার পথ ধরে পৃথিবী সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে, সেই পথটিকে বলে পৃথিবীর কক্ষ বা কক্ষপথ।
২১) কক্ষপথের আকৃতি কেমন?
উত্তর. উপবৃত্তাকার
২২) কক্ষপথের পরিধি কত?
উত্তর. ৯৬ কিমি
২৩) নিজের মেরুদণ্ডের চারিদিকে সম্পূর্ণ আবর্তন করতে পৃথিবীর কত সময় লাগে?
উত্তর. ২৩ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট ২৪ সেকেণ্ড অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টা
২৪) ৬০ ডিগ্রী উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশে পৃথিবীর গতিবেগ কত?
উত্তর. ৯৯০ কিমি (ঘণ্টায়)
২৫) সূর্য পৃথিবীর তুলনায় কত গুণ বড়ো?
উত্তর. ১৩ লক্ষ গুণ বড়ো
২৬) ছায়াবৃত্ত কী?
উত্তর.ভূপৃষ্ঠের আলোকিত অর্ধাংশ এবং অন্ধকার অর্ধাংশের সীমারেখাকে বলে ছায়াবৃত্ত।
২৭) সৌরবছর কাকে বলে?
উত্তর. সৌরজগতের কোনো গ্ৰহের সূর্যকে একবার প্ৰদহ্মিণ করে আসতে যে সময় লাগে তাকে ঐ গ্ৰহের সৌর বছর বলে।
২৮) ফেরেলের সূত্র কী?
উত্তর. পৃথিবীর আবর্তন গতির জন্য বায়ুপ্রবাহ ও সমুদ্রস্রোত উত্তর গােলার্ধে ডানদিকে এবং দক্ষিণ গােলার্ধে বাঁদিকে বেঁকে যায়। এটিই হল ফেরেলের সূত্র।
২৯) অপসূর অবস্থান কী?
উত্তর. পৃথিবী থেকে সূর্যের গড় দূরত্ব প্রায় ১৫ কোটি কিমি।কিন্তু উপবৃত্তাকার কক্ষপথে পৃথিবীর সূর্যকে পরিক্রমণ এবং ওই কক্ষপথের নাভিতে সূর্যের অবস্থানের জন্য এই দূরত্ব সারাবছর একই রকম থাকে না।৪ঠা জুলাই তারিখে পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যে দূরত্ব হয় সবচেয়ে বেশি, প্রায় ১৫ কোটি 20 লক্ষ কিমি।৪ঠা জুলাই তারিখে কক্ষপথে পৃথিবীর সূর্য থেকে এই দূরতম অবস্থানকে পৃথিবীর অপসূর অবস্থান বলে।
৩০) অনুসূর অবস্থান কী?
উত্তর. ৩রা জানুয়ারি সুর্য থেকে পৃথিবীর দুরত্ব বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম থাকে প্রায় ১৪ কোটি ৭০ লক্ষ কিমি। কক্ষপথের এই অবস্থানের নাম পৃথিবীর অনুসূর অবস্থান।
৩১) সূর্যকে পরিক্রমণ করার সময় পৃথিবী নিজের কক্ষতলের সঙ্গে কত ডিগ্রি কোণে হেলে থাকে?
উত্তর.৬৬.৫ (সাড়ে ৬৬) ডিগ্রী
৩২) মহাবিষুব ও জলবিষুব কী?
উত্তর.২১শে মার্চ এবং ২৩শে সেপ্টেম্বর—এই দুটি তারিখে পৃথিবী নিজ কক্ষপথে চলতে চলতে এমন জায়গায় আসে যে, মধ্যাহ্ন সূর্যকিরণ নিরক্ষরেখার ওপর লম্বভাবে পড়ে এবং পৃথিবীর সর্বত্র দিন-রাত্রি সমান হয়।২১শে মার্চ দিনটিকে বলে মহাবিষুব এবং ২৩শে সেপ্টেম্বর দিনটিকে বলে জলবিযুব।
৩৩) নিরক্ষরেখা কাকে বলে?
উত্তর. সুমেরু বিন্দু ও কুমেরু বিন্দু থেকে সমান দূরে পৃথিবীর ঠিক মাঝখানে যে কাল্পনিক বৃত্তাকার রেখাটি পৃথিবীকে পূর্ব-পশ্চিমে বেষ্টন করে আছে, তাকে নিরক্ষরেখা বলে।
৩৪) নিরক্ষরেখার মান কত?
উত্তর. শূন্য ডিগ্রী
৩৫) কোথায় পৃথিবীর গতিবেগ সবচেয়ে বেশি?
উত্তর. নিরক্ষরেখায়
৩৬) গ্রীনিচ সময় যন্ত্রের নাম কী?
উত্তর. ক্রনোমিটার।
৩৭) অক্ষাংশ কাকে বলে?
উত্তর. ভূ-পৃষ্ঠের কোনো জায়গা থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত একটি সোজা রেখা বা ব্যাসার্ধ টানলে ঐ রেখা নিরক্ষীয় তলের সঙ্গে যে কোণ তৈরি করে সেই কোণই হল সেই জায়গার অক্ষাংশ।
৩৮) প্রতিটি অক্ষরেখার কোণের সমষ্টি কত?
উত্তর. ৩৬০ ডিগ্রী
৩৯) কর্কটক্রান্তি রেখা কী?
উত্তর. নিরক্ষরেখার উত্তরে সাড়ে ২৩ ডিগ্রী কৌণিক দুরত্বে অঙ্কিত কাল্পনিক বৃত্তাকার রেখাকে কর্কটক্রান্তি রেখা বলে।
৪০) উত্তরগোলার্ধে কোন দিনটি কর্কটসংক্রান্তি?
উত্তর. ২১ শে জুন
৪১) মকরক্রান্তি রেখা কী?
উত্তর. নিরক্ষরেখার দক্ষিণে সাড়ে ২৩ ডিগ্রী কৌণিক দূরত্বে অঙ্কিত বৃত্তাকার কাল্পনিক রেখাকে মরকক্রান্তি রেখা।
৪২) উত্তরগোলার্ধে কোন দিনটি মকরসংক্রান্তি?
উত্তর. ২২ শে ডিসেম্বর
৪৩) সুমেরু বৃত্ত কী?
উত্তর. নিরক্ষরেখার উত্তরে ৬৬.৫ ডিগ্রী কৌণিক দূরত্ব অঙ্কিত কাল্পনিক বৃত্তাকার রেখা হলো সুমেরুবৃত্ত।
৪৪) উত্তর গোলার্ধের কোন স্থানে ধ্রুবতারার উন্নতি ৯০ ডিগ্রী ?
উত্তর. উত্তর গোলার্ধের সুমেরুতে।
৪৫) কুমেরু বৃত্ত কী?
উত্তর. নিরক্ষরেখার দক্ষিণ ৬৬.৫ ডিগ্রী কৌণিক দূরত্ব অঙ্কিত কাল্পনিক বৃত্তাকার রেখা হলো কুমেরু বৃত্ত ।
৪৬) প্রত্যেকটি দ্রাঘিমার কোণের সমষ্টি কত?
উত্তর. ১৮০ ডিগ্রী
৪৭) মূলমধ্যরেখার মান কত?
উত্তর.শূন্য ডিগ্রী।
৪৮) মূল মধ্যরেখা কোন শহরের উপর দিয়ে টানা হয়েছে?
উত্তর. গ্রীনিচ শহরের রয়াল অবসার্ভেটরী-র উপর দিয়ে।
৪৯) দ্রাঘিমা বা দ্রাঘিমাংশ কাকে বলে?
উত্তর. মূলমধ্যরেখা থেকে পূর্ব দিকে বা পশ্চিমদিকে অবস্থিত কোন স্থানের কৌণিক দূরত্বই হলো সেই স্থানের দ্রাঘিমাংশ।
৫০) শূন্য রেখাটির নাম কী?
উত্তর. মূল মধ্যরেখা।
৫১) দ্রাঘিমারেখা কাকে বলে?
উত্তর. সুমেরু বিন্দু থেকে কুমেরু বিন্দু পর্যন্ত ভু-পৃষ্ঠের ওপর উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত অর্ধ-বৃত্তাকার কাল্পনিক রেখাগুলিকে দ্রাঘিমারেখা বলে।
৫২) গ্রীনিচের দ্রাঘিমা কত?
উত্তর. শূন্য ডিগ্রী
৫৩) দ্রাঘিমারেখাকে দেশান্তর রেখা বলা হয় কেন?
উত্তর. দ্রাঘিমারেখার সাহায্যে পূর্বে বা পশ্চিমে কোন দেশের অবস্থান নির্ণয় করা হয় বলে দ্রাঘিমারেখাকে দেশান্তর রেখাও বলে।
৫৪) ভারতের প্রামাণ্য দ্রাঘিমা কত?
উত্তর. ৮২ ডিগ্রী ৩০ মিনিট
৫৫) কলকাতার দ্রাঘিমা কত?
উত্তর. ৮৮ ডিগ্রী ৩০ মিনিট পূর্ব
৫৬) ১ ডিগ্রী দ্রাঘিমার পার্থক্যে সময়ের পার্থক্য কত হয়?
উত্তর. ৪ মিনিট
৫৭) আন্তর্জাতিক তারিখরেখার মান কত?
উত্তর. ১৮০ ডিগ্রী
৫৮) নিরক্ষরেখায় ১ ডিগ্রী অন্তর দুটি দ্রাঘিমারেখার রৈখিক ব্যবধান কত?
উত্তর.১১৩.৩ কিমি
৫৯) মেরুপ্রদেশের কাছাকাছি স্থানসমূহের অক্ষাংশকে কী বলে?
উত্তর. উচ্চ অক্ষাংশ
৬০) গ্রীনিচ শহরের ওপর দিয়ে বিস্তৃত দ্রাঘিমারেখার নাম কী?
উত্তর. মূল মধ্যরেখা
৬১) আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা কাকে বলে?
উত্তর. মূল মধ্যরেখা থেকে ১৮০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমায় বা ১৮০ ডিগ্রি পশ্চিম দ্রাঘিমায় সম্পূর্ণ জলভাগের ওপর দিয়ে উত্তর-দক্ষিণে প্রসারিত একটি রেখা কল্পনা করা হয়েছে, তাকে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা বলে।
৬২) কোন প্রণালীর মধ্যে দিয়ে আন্তর্জাতিক তারিখরেখা কল্পনা করা হয়েছে?
উত্তর. বেরিং প্রণালীর মধ্যে দিয়ে।
৬৩) অক্ষরেখার আর এক নাম কী?
উত্তর. সমাক্ষরেখা
৬৪) সর্বোচ্চ দ্রাঘিমা ও সর্বোচ্চ অক্ষাংশ কত?
উত্তর. সর্বোচ্চ দ্রাঘিমা ১৮০ ডিগ্রী এবং সর্বোচ্চ অক্ষাংশ ৯০ ডিগ্রী
৬৫) কোন রেখাগুলি পৃথিবীকে পূর্ব-পশ্চিমে বেস্টন করে আছে?
উত্তর. অক্ষরেখাগুলি।
৬৬) কোন স্থান ও তার প্রতিপাদ স্থানের মধ্যে সময়ের পার্থক্য কত?
উত্তর. ১২ ঘণ্টা।
৬৭) কোন জায়গার স্থানীয় সময়কে ভারতের প্রমাণ সময় ধরা হয়?
উত্তর. এলাহাবাদের।
৬৮) কলকাতা ও এলাহাবাদের স্থানীয় সময়ের পার্থক্য কত?
উত্তর. ২৪ মিনিট।
৬৯) কোন স্থানের অক্ষাংশ ৩০ ডিগ্রী দক্ষিণ হলে ঐ স্থানের প্রতিপাদ স্থানের অক্ষাংশ কত?
উত্তর. ৩০ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ।
৭০) ক্রনোমিটার কী?
উত্তর. বিশেষ ধরণের ঘড়ি। এই ঘড়ির মাধ্যমে গ্রীনিচের সময় জানা যায়।
৭১) কলকাতার প্রতিপাদ স্থানের দ্রাঘিমা কত?
উত্তর. ৯১ ডিগ্রী ৩০ মিনিট পশ্চিম ।
৭২) কোন সমাক্ষরেখাকে মহাবৃত্ত বলে?
উত্তর. নিরক্ষরেখাকে।
৭৩) কর্কটক্রান্তি রেখা ও সুমেরুবৃত্তের অক্ষাংশ কত?
উত্তর. কর্কটক্রান্তি রেখার অক্ষাংশ ২৩.৫ ডিগ্রী উত্তর এবং সুমেরু বৃত্তের অক্ষাংশ ৬৬.৫ ডিগ্রী উত্তর।
৭৪) ভারতের প্রমাণ সময় নির্ণয়ের জন্য কোন দ্রাঘিমা নির্ধারিত হয়েছে?
উত্তর. ৮২ ডিগ্রী ৩০ মিনিট পূর্ব।
৭৫) নিশীথ সূর্যের দেশ কাকে বলে?
উত্তর. নরওয়ের হ্যামারফেস্ট বন্দরকে